শ্রম, মেধা, ত্যাগ ও নিষ্ঠার সঙ্গে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ছাত্রদলের শিখরে পৌঁছেছেন ভোলার লালমোহনের কৃতি সন্তান আমজাদ হোসেন সাকিল। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,তার রাজনীতির শুরু গ্রাম থেকেই। মাধ্যমিকে পড়ার সময়-ই শহীদ জিয়ার প্রেমে পড়ে কৈশোরে ছাত্র রাজনীতিতে নাম লেখান।
প্রত্যন্ত এক গ্রামের সরল পথ পেরিয়ে ছাত্র রাজনীতির কেন্দ্রে উঠে আসা একজন সংগ্রামী,আদর্শনিষ্ঠ ছাত্র নেতার নাম সাকিল খাঁন। তাঁর ছাত্র রাজনীতির জীবন কেবল পদ-পদবির গল্পে সীমাবদ্ধ নয়,যেখানে রয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম আর নিপীড়নের কণ্টকাকীর্ণ কঠিন পথ। যেখানে প্রত্যয়, ত্যাগ, আদর্শ এবং নেতৃত্ব মিলেমিশে সৃষ্টি করেছে এক অনন্য পান্ডুলিপি।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হয়েই যে তার পথচলা শুরু তা কিন্তু নয়? ২০০১ সালের ১লা অক্টোবর সংসদ নির্বাচনে তাঁর নিজ ভোট কেন্দ্রে মায়ের সাথে দেখতে গিয়ে বোমা হামলার সম্মুখীন হন। সেদিনের ভয়াবহতম স্মৃতি তাকে এখনো স্মৃতিকাতর করে। সেদিন-ই শপথ নিয়েছিলেন জাতীয়তাবাদী আদর্শে নিজেকে সমর্পন করবেন।
তাই মাধ্যমিকের ছাত্র জীবনে দলীয় মিটিং মিছিল সভা-সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। লালমোহন পৌরসভার ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সম্মেলনে তিনি বক্তব্য দিয়ে তৎকালীন উপজেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র এনায়েত কবির পাটোয়ারীর ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সমমান ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ ওই সময় আ.লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেও সরকার দলীয় ছাত্রলীগ নেতাদের হুমকি আর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রদলকে সুসংহত শক্তিশালী করতে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। যে কারণে নিজ এলাকায় তিনি অনেক হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হন।
উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ঢাকায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়েই স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ছাত্রজীবনের সেই আগুনঝরা দিনগুলোতে তিনি ছিলেন রাজপথের সাহসী কণ্ঠস্বর। যেখানে জেল-জুলুম, মিথ্যা মামলা, নিপীড়ন ছিল প্রতিদিনের সঙ্গী, সেখানে তিনি ছিলেন আপসহীন ও দৃঢ় মনোবলের এক ছাত্র নেতার প্রতীক। তিনি অসাধারণ সাহস, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, আর নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে রাজনীতির প্রকৃত পাঠ গ্রহণ করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে উঠে আসেন একজন তরুণ উদীয়মান ছাত্র নেতা হিসেবে।
তিনি শুধু রাজপথে নেতৃত্বই দেননি, অনুজ সহকর্মীদের দিয়েছেন শৃঙ্খলা, আদর্শ, তাঁর নেতৃত্বে রাজপথে স্বৈরাচার হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। তিনিও পুলিশি নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হন। নির্যাতন, নিপীড়নের মুখেও অটল থেকেছেন দলের প্রতি ভালোবাসায়। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি এই নিষ্ঠা ও ত্যাগের পুরস্কার হিসেবে তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে উঠে আসেন।
২০২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্ত্রী,সন্তানকে বাসায় রেখে নিজের জীবনের পরোয়া না করে স্বৈরাচার হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন। রাজপথে তাঁর ত্যাগ,দলের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা তাঁকে করে তুলেছে ব্যতিক্রমী নেতা। তিনি শুধু একজন ছাত্র নেতা নন, আগামি দিনে রাজপথে তাঁর নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র, সুশাসন ও রাজনৈতিক চেতনার বাতি প্রজ্বলিত হোক, এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।