পটুয়াখালীর বাউফলে ভিডিও করার অপরাধে মো. হামিম (১০) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাউফল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিশুটিকে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামিম ওই গ্রামের কবির মোল্লার ছেলে ও ছয়হিস্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানায়, মো. হামিম তার বাসার সামনে বন্ধু জিদান, তানভীর ও মিহাদের সঙ্গে মোবাইল ফোন নিয়ে খেলার ছলে ভিডিও ধারণ করে। ওই সময় পুলিশের এসআই মাসুদুর রহমান তার হাত থেকে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয় এবং শিশুটিকে মারধর করে। পরে তাকে পুলিশের গাড়িতে উঠালে স্থানীয়দের তোপের মুখে হামিমকে ছেড়ে দেয়।
হামিম জানায়, সে তার বন্ধুদের সাথে মোবাইল ফোন নিয়ে খেলছিল। তখন পুলিশ তার কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায় এবং কানের উপর চার পাচটি থাপ্পড় মারে। এতে তার কানে ব্যথা হয়। পরে পুলিশ তাকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী জালাল খন্দকার বলেন, পুলিশ শিশুটিকে মারধর করে গাড়িতে উঠালে কলম শাহ, কুদ্দুস মোল্লা ও আমি শিশুটিকে পুলিশের কাছ থেকে রেখে দেই।
হামিমের বাবা কবির মোল্লা বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলেকে মারধর করে ফোন নিয়ে গেছে। আমি পুলিশের ভয়ে ছেলের চিকিৎসাও করাইনি। ছেলেটি সারা রাত ব্যথায় না ঘুমাতে পাড়ায় স্থানীয়দের সহায়তায় আজ (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
অভিযুক্ত উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, জমাজমি বিরোধের ঘটনায় ছয়হিস্যা গ্রামে গেলে শিশুটি আমাদের ভিডিও ধারণ করে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি, শুধুমাত্র মোবাইল ফোনটা নিয়ে এসেছি।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুরজাহান বলেন, শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে ডান কানে ব্যাথার বিষয়ে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ দেখানোর পরামর্শ দিয়েছি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, বিষয়টি জানার পরে আমি মাসুদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি শিশুটির মাথা ধরে ঝাঁকি দিয়ে মোবাইল ফোনটি নিয়ে এসেছেন বলে স্বীকার করেছেন।