জামালপুরের মাদারগঞ্জে কোয়ালিকান্দি গ্রামে চাঞ্চল্যকর মাসুদ প্রামাণিক (২৩) হত্যাকাণ্ডে নাটকীয় মোড় নিয়েছে। মামলায় অন্যদের ফাঁসাতে গিয়ে অবশেষে নিজেই ফেঁসে গেছেন নিহতের চাচা রুবেল প্রামাণিক (২০)।
গত ১২ জুলাই রাত আনুমানিক ২টায় খুন হন মাসুদ প্রামাণিক। তিনি ওই এলাকার সম্রাট আলীর ছেলে। ঘটনার পরপরই একই বাড়ি থেকে গলা কাটা অবস্থায় রুবেল প্রামাণিককে উদ্ধার করে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় মাদারগঞ্জ মডেল থানায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ওসি সাইফুল্লাহ সাইফ জানান, মাসুদ ও রুবেলের মধ্যে পূর্ব থেকেই মাদক ব্যবসা ও সেবন নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই রুবেল পরিকল্পিতভাবে মাসুদকে বাড়িতে ডেকে এনে হত্যা করে।
ওসি আরও জানান, ঘটনার দিন রাতে মাসুদ ঘুমিয়ে পড়লে রুবেল আগে থেকেই লুকিয়ে রাখা চাকু দিয়ে তার পিঠে আঘাত করে। মাসুদ জেগে ওঠে এবং ছুরি নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে রুবেলের গলায় ও হাতে ছুরির আঘাত লাগে। পরে মাসুদ দুর্বল হয়ে পড়লে রুবেল মাসুদের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর নিজেও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে রুবেলের বড় ভাই প্রবাসী ফরিদুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার চেষ্টা করেন বাদীপক্ষ। তবে তদন্তে উঠে আসে, পুরো হত্যাকাণ্ডের পেছনে রুবেল একাই দায়ী এবং অন্য কেউ এতে সম্পৃক্ত নয়। ফরিদুল ইসলাম ঘটনার দিন মাদারগঞ্জে এলেও তিনি তার বোনের বাড়িতে ছিলেন, নিজ বাড়িতে যাননি।
পুলিশ জানায়, রুবেল সুপরিকল্পিতভাবে ঘটনার দিন বাড়ি ফাঁকা রাখতে তার মা ও ভাইকে অন্যত্র সরিয়ে রাখেন। চিকিৎসা শেষে রুবেলকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তিনি আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গত ২০ জুলাই রুবেলকে আদালতে হাজির করার পর জামালপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে আরো কেউ মাদকের সাথে জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।