ভুয়া বায়না চুক্তি ধরা পরার পর জেলও খেটেছেন রুহুল আমিন। জেল থেকে বের হয়ে পুনরায় জমি দখলে রেখেছেন তিনি। মানছেন না আইনকানুন, নিয়ম নীতি এবং সালিশ বিচার। এ যেন রুহুল আমিনের জোর জুলুমের রাজ্য। জমিতে মালিক পক্ষ গেলে তাদেরকে খুন, জখম করা হবে না হয় নিজের লোককে খুন করে জমির মালিকদেরকে ফাঁসানো হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ঘটনাটি ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড চর ছকিনা এলাকার।
ভুক্তভোগী মোঃ রাশেদ খান অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা মৃত মোঃ ফরিদ উদ্দিন খান গত ২৯/০৪/১৯৯৫ ইং সালে ২৮০১ নং দলিল মূলে চর ছকিনা মৌজার ১০৩৯ নং খতিয়ানে ১.৩২ একর এবং একই মৌজার ১০৫৩ খতিয়ানের ২৮ শতাংশ মোট ১.৬০ একর জমি ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছেন। যার বর্তমান বিএস নং ৩৫৮৩। বাবা জীবিত থাকা অবস্থা থেকে জমির পাশের বাড়ির মোঃ রুহুল আমিন এই জমিটি বর্গা এবং বছর বছর লগ্নি রাখতেন।
২০১৯ সালে আমার বাবা হজ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর রুহুল আমিনের নিকট জমি লগ্নির টাকা চাইতে গেলে তিনি দেয় দিচ্ছি বলে সময় পার করতে থাকেন। কিছু দিন পর রুহুল আমিন একশ টাকার ৩টি স্ট্যাম্পে আমার বাবার নামে একটি বায়না চুক্তি আমাদেরকে দেখায় এবং বলে বায়না চুক্তির মাধ্যমে তিনি আমাদের জমি ক্রয় করেছেন। তখন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ বসে মীমাংসা চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে বায়না চুক্তি বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় চুক্তির ফটোকপি নিয়ে আমি লালমোহন সাবরেজিষ্টার অফিসে তল্লাশি করলে তা না পাওয়ায়, ভোলা আদালতে ভুয়া বায়না চুক্তির বিরুদ্ধে মামলা করি।
আদালতে মামলাটি তদন্ত করে এবং খুলনা ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে আমার বাবার আঙ্গুলের ছাপ বায়না চুক্তিতে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় বায়নাচুক্তিটি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। এরপর ভুয়া বায়না চুক্তি করার কারণে মোঃ রুহুল আমিন জেল খাটেন। জেল থেকে তিনি আমাদের জমি আমাদেরকে বুঝিয়ে দিবেন এই অঙ্গীকার করে বের হন। কিন্তু জেল থেকে বের হয়ে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে যান এবং আমাদের জমিতে আমরা গেলে আমাদেরকে খুন জখম করবে। না হয় তিনি তার পরিবারের সদস্যদের জমিতে নিয়ে খুন করে আমাদেরকে ফাঁসাবে বলে হুমকি প্রদান করছেন। আদালতে মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে।
ভুয়া বায়নাকারী জুলুমবাজ রুহুল আমিনের জোর জুলুম হতে আমরা বাঁচতে চাই এবং আমাদের জমি আমরা যাতে নিরাপদে ভোগদখল করতে পারি তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
অভিযোগের ব্যাপারে মোঃ রুহুল আমিন জানান, ওই জমি আমার না, তা সত্য। তবে আমি যেহেতু দীর্ঘদিন জমি রক্ষণাবেক্ষণ করেছি, তাই ওই জমির বর্তমান ওয়ারিশদের কাছে থেকে আমি কিনে রাখতে চাই। কারণ তারাও এ জমি বিক্রি করবেন। এছাড়া হত্যার হুমকির অভিযোগটি পুরোপুরি মিথ্যা।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।