
অর্ধশতাধিক ভিক্ষু সংঘ ও হাজারো পূর্ণার্থীর অংশগ্রহণে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি ইউনিয়নের মিলনপুর বনবিহারে সম্পন্ন হলো ২৪তম শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দান।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে দিনব্যাপী ধর্মীয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই মহতি অনুষ্ঠান শুরু হয়। শ্রদ্ধেয় শ্রাদ্ধাতিষ্য মহাস্থবির ভিক্ষুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, ত্রিরত্ন বন্দনা, ভিক্ষু বন্দনা, ত্রিশরণ প্রার্থনা, পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ, বুদ্ধপূজা, সিবলী পূজা, উপগুপ্ত পূজা, পিণ্ড দান, হাজার প্রদীপ দান, আকাশপ্রদীপ দান, অষ্টপরিষ্কার দান, সংঘদান, কল্পতরু দান ও বুদ্ধমূর্তি দানসহ নানা ধর্মীয় কর্মসূচি সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সুফল চাকমা ও আবৃতি চাকমা। উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা, সাবেক খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মিলনপুর বনবিহার কমিটির সভাপতি দেবব্রত চাকমা, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দসহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
ধর্মীয় আবহে ভক্তবৃন্দ ব্যান্ডদলসহ কল্পতরু ও চীবর শোভাযাত্রা নিয়ে বিহার প্রদক্ষিণ করেন এবং কঠিন চীবরটি আনুষ্ঠানিকভাবে ভিক্ষু সংঘকে দান করেন।
শ্রদ্ধাতিষ্য ভিক্ষু তাঁর ধর্মদেশনায় বলেন, “আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের সময় বিশাখা নামে এক উপাসিকা প্রথম কঠিন চীবর দান করেন। সেই ঐতিহ্য অনুসারেই আজও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা এই কঠিন চীবর দান পালন করে আসছেন।”
তিনি আরও জানান, বৌদ্ধ প্রথা অনুযায়ী আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাসব্যাপী ভিক্ষুরা একই বিহারে থেকে ধ্যানসাধনা ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেন, যাকে বর্ষাবাস বলা হয়। আশ্বিনী পূর্ণিমা পরবর্তী এক মাস—অর্থাৎ কার্তিক পূর্ণিমা পর্যন্ত—বিভিন্ন বিহারে এই শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপিত হয়ে থাকে।
মন্তব্য করুন