ঝিনাইগাতীর দুঃখ ভাঙনপ্রবণ মহারশি নদীর দুই পাড়ে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও স্মারকলিপি প্রদান - Channel 11
admin
১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

ঝিনাইগাতীর দুঃখ ভাঙনপ্রবণ মহারশি নদীর দুই পাড়ে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও স্মারকলিপি প্রদান

ঝিনাইগাতীর দুঃখ ভাঙনপ্রবণ মহারশি নদীর দুই পাড়ে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও স্মারকলিপি প্রদান এর খনডচিত্র। ছবিঃ চ্যানেল ১১ নিউজ

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর দুই পাড়ে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’।

১৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকাল চারটার দিকে স্বাক্ষরনামাসহ এ-সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে সকাল নয়টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত ঝিনাইগাতী সদর বাজারের প্রধান সড়কের পাশে গণস্বাক্ষর নেওয়া হয়। নদীর আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের শত শত বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ তাদের স্বাক্ষরের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের এ দাবি তুলে ধরেন।

এসময় আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল হক মনিরের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন শেরপুরের বিশিষ্ট সমাজসেবী, শেরপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, জনউদ্যোগ আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব হাকিম বাবুল, শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল কাদির, ঝিনাইগাতী ক্ষুদ্র বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি মোখলেসুর রহমান খান, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম প্রমুখ।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর দেওয়া স্মারকলিপি উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও মহারশি নদীর তীব্র ¯্রােতের কারণে নদীর দুই পাড়ে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়, যা এলাকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভয়াবহ ক্ষতির সৃষ্টি করে। একইসাথে ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদসহ সদর বাজার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিগত কয়েক বছরে মহারশি নদীর ভাঙনে উপজেলার ঝিনাইগাতী সদর, রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, দিঘিরপাড়, বনগাঁও, চতল, মরিয়মনগর, কালীনগর, বন্দভাটপাড়া, আহমদ নগর, গজারিকুড়া, ভাটপাড়া, রামনগর, বৈরাগীপাড়া গ্রামের শত শত পরিবার সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিগত তথ্য অনুযায়ী গত এক দশকে ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন ও ভেঙে গেছে, প্রায় সহ¯্রাধিক মাছের খামার ও ঘের ভেসে গেছে। প্রায় ৫০ টি মুরগীর খামার ভেসে গেছে, প্রায় ১০ হাজার একরের বেশি আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সড়ক ভেঙে গেছে, প্রতি বর্ষা মৌসুমে গড়ে ৫ হাজারের বেশি পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করেন, ঝিনাইগাতী বাজার ও আশপাশের অন্তত শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর নদীভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে মহারশি নদী এলাকার অনেক গ্রামের জন্য স্থায়ী হুমকিতে পরিণত হয়েছে। অস্থায়ী বালুর বস্তা বা কাঁচা বাঁধ দিয়ে কিছুদিনের জন্য পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও তা দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর নয়। প্রতিবছর একই দুর্ভোগে পড়া আমাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। নদীর তীর সংরক্ষণ ও জনজীবন রক্ষার্থে মহারশি নদীর উপর একটি স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হলে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিরাপদ থাকবে, ঝিনাইগাতী বাজার ও আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষা পাবে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হবে, জনগণের জীবনমান ও স্থানীয় অর্থনীতি টেকসই হবে।

আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, বর্ষা মৌসুমে মহারশি নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে দুই পাড়ের কয়েকটি গ্রাম নিয়মিতভাবেই প্লাবিত হয়। এতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ফসল, ঘরবাড়ি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসব দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে নদীর দুই পাড়ে টেকসই ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এ নদীর টেকসই ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ঝিনাইগাতীবাসীর প্রাণের দাবি। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ধারাবাহিকভাবে আরও কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

এ বিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি ও স্বাক্ষরনামা প্রেরণ করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর মহারশি নদীর ব্রীজ সংলগ্ন খৈলকুড়া এলাকায় নদীর বাঁধ ভেঙে অন্তত ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। একই সঙ্গে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাড় উপচে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর বাজারে পানি প্রবেশ করে। এতে এক মুহূর্তে ভেসে যায় অন্তত ৯টি পরিবারের বসতভিটা। ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি, ভেসে যায় ৫০টিরও বেশি মাছের ঘের। পানিতে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হয় ৩৪৫ হেক্টর জমির আমন ধান ও ১০ হেক্টর সবজি খেত এবং আংশিকভাকে নিমজ্জিত হয় ৫৭৫ হেক্টর জমির আমন ধান ও ২৫ হেক্টর সবজি খেত। এক দিনেই সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন অনেক পরিবার।

                               

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেলান্দহ উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

মাদারগঞ্জে দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত 

মেলান্দহে স্বচ্ছতার মাধ্যমে গ্রামপুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন, নির্বাচিত ১৯ জনের রোল নম্বর প্রকাশ

লালমোহন পৌরসভায় রাস্তা নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

ইসলামপুর প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ থেকে বঞ্চিত চরপুটিমারী ইউনিয়নবাসী

মাদারগঞ্জে গ্রাহকদের টাকা উদ্ধারে সরকারি অফিস বন্ধ করে দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচী 

ঝিনাইগাতী বাজার বড় মসজিদের স্থাপন কাজের অনিয়ম প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন

মহালছড়িতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৪২ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হোন- শামীম তালুকদার

লালমোহনে পুকুর থেকে পরিচ্ছন্নকর্মীর লাশ উদ্ধার

১০

মাদারগঞ্জে পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষীদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

১১

সরকারি কর্মকর্তা হয়েও বিএনপি সমাবেশে, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সমালোচনার ঝড়

১২

শেরপুরে জাল নোট চক্রের সদস্য গ্রেফতার, জাল নোট উদ্ধার

১৩

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে যুবনেতা মোখলেস এর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‍্যালী

১৪

নির্বাচিত হলে জাহানপুর ইউনিয়নকে আধুনিক ইউনিয়নে রূপান্তরিত করব- কামাল উদ্দিন

১৫

মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন

১৬

লালমোহনে মৎস্যজীবী দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

১৭

সরিষাবাড়ীতে বিএনপি’র জনসভা অনুষ্ঠিত, ৩১ দফা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ নেতাকর্মীরা

১৮

ইসলামপুরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত

১৯

মেলান্দহে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও পথসভা

২০